|| সাবুর উপাখ্যান ||
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Sabur Upakhyan
কাকার সাথে রতন আসে
তাদের ভাত-পরোটা-মাছের দোকান।
বাস স্ট্যান্ডের পাশেই এটা
তাই ভীড় থাকে রোজই সমান।
ড্রাইভার-কন্ডাকটাররা ভাত-মাছ খায়
পয়সা বেশী হʼলে চিকেন।
পদগুলো হয় বেশ সুস্বাদু
রান্নাটা কাকু ভালই জানেন।
পাশেই একটা চায়ের দোকান
মালিক রাম কাকুর বেশ বয়েস হয়েছে।
দরকার হʼলে অনেক সময়
রতন চায়ের দোকান সামলেছে।
অনেক দিনের রতনের ইচ্ছা
ওই চায়ের দোকানটা যদি পাওয়া যায়।
হোটেলটা একটু বড় হয় তাহলে
কিছু চেয়ার-টেবিল বাড়ানো যায়।
হঠাৎ একদিন সকালে দেখে সে
একটি মেয়ে এসেছে চায়ের দোকানটাতে।
একি, রামকাকু এমন ঠকালো তাকে যে
স্বপ্নেও ভাবে নি এটাকে।
চায়ের সঙ্গে যোগ করে মেয়ে
ঘুগনি, টোস্ট আর ডিমভাজা।
চায়ের দোকানে এ সব দেখে
আশেপাশে খদ্দেরদের ভারী মজা।
ভাত-মাছ ছেড়ে অনেকেই চায়
টোস্ট-ঘুগনি খেতে।
পয়সা বাঁচিয়ে হাল্কা খাবার
সবাই উঠলো মেতে।
মুখ বদলাতে মেয়ের দোকানে
দিনে দিনে বাড়ে ভীড়।
কাকা-ভাইপোর সব খদ্দের যায়
চিন্তায় তারা অধীর।
হঠাৎ একদিন মেয়েটি দেখে
রতন দোকানে নেই।
ম্লান মুখে কাকা খাবার নিয়ে
খদ্দের সামলাচ্ছে একলাই।
সন্ধ্যেবেলা কাকু যখন
দোকান বন্ধ করে।
মেয়েটি ডাকে,ʼকাকু,
আজ রতন কেন ঘরেʼ?
কাকু বলে, ʼদেখ মা,
আজকে ওর দারুন জ্বরʼ।
ʼডাক্তার বলেছে শুয়ে থাকতে
দোকানে আসবে সাতদিন পরʼ।
ʼতোমার নামটি কি মাʼ,
কাকু জিজ্ঞেস করে।
ʼআমার নাম সাবিনা,
সাবু বলে সব ডাকেʼ।
ʼকার কাছে তুমি থাক বাড়ীতে
সেখানে কে কে থাকেʼ?
প্রশ্ন শুনে কাকু দেখে
সাবুর চোখে জল।
বলবে কি সে, জানে না সে তা
পায়না সমুদ্রের তলাতল।
ছোটোবেলাতে এক মেলাতে
আমার বাবা-মা হারিয়ে গেছে।
ঝড় বৃষ্টির দাপটে সেদিন
ছাড়াছাড়ি হয় তাদের সাথে।
জ্ঞান হারিয়ে পড়ে ছিলাম আমি
কোনোও এক বাড়ীর কোনাতে।
চোখ খুলে দেখি
শুয়ে আছি এক ফকির বাবার বাড়ীতে।
সেই আমাকে মানুষ করেছে
তাকেই বাবা বলে ডাকি।
এখন আমিই তার আশ্রয়
তার কাছেই আমি থাকি।
কাল খেকে কাকু, ʼআপনি চাইলে
দু-দোকান একসঙ্গে চলুকʼ।
ʼবিক্রি যা হবে, ভাগ করে নেব
রেষারেষিটা বন্ধ হোকʼ।
তেমনই হোল পরদিন থেকে
কাকুর মুখে হাসি ফোটে।
ভাগাভাগির লভ্যাংশে
কাকুর ভাগ্যে বেশীই জোটে।
কʼদিন বাদে রতন ফেরে
এখন রতন-সাবুর এক দোকান।
এর পরে কি হোলো ছেড়ে
শেষ করি এই উপাখ্যান।