
|| ভক্ত – দ্বিতীয় অংশ ||
Bhakta Part Two
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
একটু পরে নিজেকে সামলে জমিদারবাবু বললেন,
ʼতুমি আজকে থেকেই এখানে আসতে পারʼ।
ʼআমার অন্দরমহলে একটা কাজ আছেʼ
ʼসেটা তুমি চাইলে করতে পারʼ।
ʼকাজটা একটু ঝামেলারʼ
ʼআমার ফাই-ফরমাস খাটতে হবেʼ।
ʼতোমার এখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হবেʼ,
ʼআর মাসে তিন হাজার টাকা মাইনে পাবেʼ।
ভক্ত তো এক কথায় রাজী
বললো, ʼআমি কৃপাকে বলে আসছিʼ।
ʼএকটু পরেই আমি গোপালজীকে ʼ
ʼসঙ্গে নিয়ে এখানে চলে আসছিʼ।
একটু পরেই ভক্ত জমিদার বাড়ীতে
এসে হাজির হলো।
একটা বিরাট ঘরে
তার থাকার ব্যবস্থা হলো।
এত বড় ঘর সে দেখেনি আগে
মনে মনে গোপালজীকে বারবার ধন্যবাদ দিল।
ভাবলো গোপাজীর কৃপায়
জমিদার বাড়ীতে তার ঠাঁই হলো।
ছোট্ট একটা টেবিল যোগার করে
সে গোপালজীর আসন পাতলো সেখানে।
গোপালজীর খাট তো সে নিয়ে আসেনি বাড়ী থেকে
তাই টাকা পেলে সে গোপালজীর একটা খাট আনবে কিনে।
ভক্ত মন দিয়ে কাজ করে,
আর গোপালজীর সেবা করে দু বেলা।
জমিদারবাবুও খুব খুশি তার কাজে
সে একটুও করে না কোনও কাজে অবহেলা।
মাঝে মাঝে কৃপা আসে
তার সঙ্গে দেখা করতে।
সেও গেছিল কৃপার জন্মদিনে
ছুটি নিয়ে কৃপার বাড়ীতে।
সে কৃপার কাছে গল্প শুনেছে
জমিদার বাড়ীতে দূর্গা পুজো হয় মহা ধুমধাম করে।
তখন একটা মজার ব্যাপার হয়।
দশমীর দিন জমিদারবাবু প্রজাদের সঙ্গে বসে খান পুজোর পরে।
এক প্রকান্ড মাঠে আসন পেতে বসে
মা দূর্গার ভোগ সবাই একসঙ্গে খায়।
তবে এটা শুধু এ গ্রামের প্রজারা ও তাদের বাড়ীর লোক
এই ভোগ খাবার নিমন্ত্রণ পায়।
প্রসাদ প্রতিজনে একবার করেই পায়।
আর সেটা মাঠের বাইরে নিয়ে যাওযা মানা।
তাই বাইরের কেউ
এ প্রসাদ খেতে পায় না।
কিছুদিন বাদে, দূর্গা পুজোর দিন চলে আসে।
মহাসমারোহে জমিদার বাড়ীতে দূর্গা পুজো শুরু হয়।
ভক্তের এসময়ে কাজের আর শেষ নেই
সে মন দিয়ে সব কাজ করে যায়।
ভক্ত সামনে থেকে দূর্গা পুজো দেখেনি আগে
তাই তার খুব ভাল লাগে পুজোর সব কাজ।
সপ্তমী, অষ্টমী আর নবমী কেটে যায় ভালোলাগার ঘোরে
মায়ের দশমী পুজো আজ।
মায়ের ঘট বিসর্জন হয়ে গেছে
সকলেরই মন খারাপ আজ।
আবার মা আসবেন আবার এক বছর পরে
বিকেলে প্রতিমা নিরন্জনে ভক্তের অনেক কাজ।
দুপরে সেই বহু প্রতিক্ষিত
মাঠে বসে প্রসাদ খাওয়ার সময় এসে গেছে।
ভক্ত সব কাজ সেরে
অনেকের সাথে মাঠের দিকে যাচ্ছে।
হঠাৎ এক বুড়ো ভিখিরি
রাস্তায় তার জামা ধরে ডাকলো।
সে সবাইকে এগিয়ে যেতে বলে
ভিখিরির কাছে এগিয়ে গেল।
ʼআমাকে একটু প্রসাদ দেবে গোʼ
ʼজানি প্রসাদ দেওযা বাইরে মানাʼ।
ʼতুমি তো জমিদারবাবুর খাস লোকʼ
ʼতাই তুমি এটা পারবে, এটা আমার জানাʼ।
ʼআচ্ছা আমি দেখছিʼ,
ʼতুমি এখানেই বসোʼ।
ʼআমি তোমার জন্যেʼ
ʼএখানেই প্রসাদ আনবʼ।
কিন্তু ভেতরে সে একটার বেশী
প্রসাদ পেল না।
তাই নিজের প্রসাদটাই
ভিখিরিকে দিয়ে ঘরে চলে গেল।
সে না খেয়েই
বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভারছে।
জমিদারবাবুর কথা অমান্য করে
সে বাইরের মানুষকে খাইয়েছে।
হয়ত তার চাকরিটাই চলে যাবে
এই অমান্য করা কাজে।
ক্লান্ত শরীরে কখন
চোখটা বন্ধ হয়ে গেছে।
ঘুম ভেঙ্গে দেখে
জমিদারবাবু তাকে ড়াকছে।
জমিদারবাবু তার হাতে
প্রসাদের থালা দিয়ে বললো,
আমি সব শুনেছি
তোমার কান্ড কারখানা।
তুমি আমার চোখ খুলে দিয়েছ
পরেরবার থেকে সবাই প্রসাদ পাবে।
যে আসবে, সেই মাঠে বসে
আমার সঙ্গে খাবে।
ভক্ত সব কথা শুনে
খুশিতে তার চোখে জল এসে গেল।
জমিদারবাবু খুশি হয়ে
আরও দায়িত্বপূর্ণ কাজ ভক্তকে দিল।

